প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করে সাবান প্রস্তুতি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করে সাবান প্রস্তুতি।
মূলনীতিঃ
তেল ও চর্বি হচ্ছে উচ্চতর
ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারিনের ট্রাই-এস্টার বা গ্লিসারাইডসমূহের মিশ্রণ। উচ্চতর
সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডসমূহের মধ্যে, বিশেষত পামিটিক এসিড (C15H31COOH), স্টিয়ারিক
এসিড (C17H35COOH) এবং
অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডসমূহের মধ্যে ওলেইক এসিড (C17H33COOH) বিদ্যমান। সুতরাং তেল বা
চর্বির সাথে সোডিয়াম বা পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণ উত্তপ্ত করলে অন্যান্য সকল
এস্টারের ন্যায় তা অ্যালকোহল এবং এসিডের সোডিয়াম বা
পটাসিয়াম লবণে পরিণত হয়।
ফ্যাটি এসিডসমূহের সোডিয়াম বা পটাসিয়াম লবণই হচ্ছে সাবান। তৈরির হওয়ার পর তা পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে। এ দ্রবণে লবণ যোগ করলে সাবান দ্রবণ হতে বের হয়ে আসে। পরিস্রাবণের মাধ্যমে তা পৃথক করা যায়।
বিক্রিয়াটি নিম্নরূপঃ
ট্রাইগ্লিসারাইড (তেল/চর্বি) + সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড → গ্লিসারল + ফ্যাটি অ্যাসিডের সোডিয়াম লবণ (সাবান)
যন্ত্রপাতিঃ বিকার ২টি, ত্রিপদী স্ট্যান্ড, তারজালি, বুখনার ফানেল, ফিল্টার পেপার।
রাসায়নিক দ্রব্যঃ নারিকেল বা অন্য কোনো তেল, কস্টিক সোডা ও লবণ।
কার্যপদ্ধতি ঃ
ক. একটি বিকারে পানি পূর্ণ করে এর উপরে চিত্রের ন্যায় পোর্সিলিন বাটি স্থাপন করে স্টিম বাথ প্রস্তুত করি।
খ. পোর্সিলিন বাটিতে 5 mL নারকেল তেল বা 5g চর্বি এবং 30 mL সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড দ্রবণ নিই।
গ. মিশ্রণটিকে স্টিম বাথে 30 মিনিট ধরে ফুটাই। এ সময় নাড়ানি কাঠি দ্বারা একটু পর পর নাড়তে থাকি এবং পনি যোগ করে বাষ্পিভূত পানির ঘাটতি পূরণ করি। এ সময় তেল বা চর্বি সম্পূর্ণ দূরীভূত হয়ে আঠালো পদার্থ সৃষ্টি হয়।
ঘ. অতঃপর তাপ দেওয়া রুদ্ধ করি এবং মিশ্রণটিকে ঠান্ডা হতে দিই।
ঙ. ঠান্ডা মিশ্রণে 50 mL NaCl এর সম্পৃক্ত দ্রবণ যোগ করে কয়েক ঘন্টা রেখে দিই।
চ. একটি ফিল্টার পেপারের সাহায্যে মিশ্রণটিকে ছেঁকে পরিস্রুত অংশ ফেলে দিয়ে সাবানকে শুকাতে দিই।
ফলাফলঃ নারিকেল তেল ও কস্টিক সোডা ব্যবহার করে সাবান প্রস্তুত করা হলো।
সতর্কতাঃ
১) সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড গরম অবস্থায় অত্যন্ত তীব্র ক্ষয়কারক পদার্থ। সুতরাং এটি যাতে পড়ে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনা না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
২) উৎপন্ন সাবানকে হাতে বা গাঁয়ে ব্যবহার না করা।
No comments